Sunday, November 28, 2010

পরিচয়



বায়োলজীতে ভালো করেছিলাম একবার
বাবা বলেছিলেন ছেলে হবে ডাক্তার
মা রেগে গিয়ে ঘর করেছিলেন তোলপাড়
বলেছিলেন আমার ছেলে হবে ইণ্জ্ঞিনিয়ার
প্রেমিকা বলেছিল নিজের পায়ে দাড়াও আগে সবার
নইলে বিয়ে দিয়ে দেবে বাবা, ছেলে গভমেন্ট অফিসার
গানের গলা ছিল ভালো, বন্ধুরা ডাকত কিশোর কুমার
তইতো স্বপ্ন গড়তাম একদিন হবো বিশাল ষ্টার
স্বপ্নগুলো স্বপ্নই রয়ে গেল.... হয়ে হয়েও কিছু হয়ে উঠলো না আমার
বিশাল বড় এক অফিস এখন আমার ......
এখন আমি টো টো কোম্পানীর ম্যানেজার..!!!!!

এখনও .........



এখনও ভোর হয়, আমাদের ছোট্ট গাঁয়ে
কুয়াশার লেপে মুড়িয়ে গমের বীজ ক্ষেত পাহারারত আমি নেই
আমাকে না পেয়ে ছোট ছোট শালিকগুলো
নির্ভয়ে মাতছে শস্যদানা সংগ্রহে
আর আমি এই ইট-পাথরের শহরে
নিজের অস্তিত্ব খুঁজে যাই.....

এখনও চড়ুইভাতি হয়, আমাদের ছোট্ট গাঁয়ে
কৃষকের গোলার শস্য কিংবা পুকুরের মাছ চুরি করতে আমি নেই
আমাকে না পেয়ে আমার সহচরেরা
ঘরের দানায় সারছে সব প্রয়োজন
আর আমি এই নিঃসংগ শহরে
নুতন সহযাত্রী খুঁজে যাই......

এখনও পালা গানের আসর বসে, আমাদের ছোট্ট গাঁয়ে
বাউলের গলায় আমার লেখা গানগুলো এখন নেই
সুর না পেয়ে আমার সব সৃষ্টি
আজ কুকঁড়ে উঠে অপূর্ণতায়
আর আমি এই রঙ্গহীন শহরে
নুতন পরিচয় খুঁজে যাই......

ভূল পরিচয়



ঝাঁকের পাখি পথ হারিয়ে
ধূসর আলোর শেষ বিকেলে
কড়া নেড়ে তোমার দরজায়
পরলাম ফাঁদে ভূল সময়ে |

মিথ্যে আশায়, কথার মায়ায়
বনের পাখি পুষলে খাঁচায়
সূতোর ডোরে বন্দী করে
ছাড়লে তোমার দৃষ্টির সীমায় |

সব বাঁধন ছিঁড়ে, যাব উড়ে
দূর আকাশের গায়ে
এই পৃথিবী তোমার জন্য, আমার সে নয়
দেখা হবে অন্য কোথাও
আর এক পরিচয়ে ||

উপহার



দিনটা, আজ মনে পরে কি তোমার ?
কথা ছিল হাতে হাত রেখে দুজনায়
পাড়ি দেব আকাশের নীল সীমানায়
উড়ে গেছি আমি ঠিকই, স্মৃতির ডানায় ভেসে
থাকোনি শুধু তুমি অপেক্ষায় |
বৃষ্টিতে ভেজার, কথা ছিল দুজনার
ভিজে চলেছি একা আমি, আজো দুচোখের জলে
বৃষ্টিতে ভেজা হলোনা তোমার ......

পুতুল খেলার ছলে
কাঁচের মত ভেঙ্গেছ যে হৃদয়
সে হৃদয়ে আজো তোমায়
আগলে রেখেছি ভালোবাসায় |
বালির প্রাচীরে ঘেরা
অভিমানে ভেঙ্গেছ যে ঘর
সে ঘরে আলো জ্বালিয়ে আমি
থাকি আজো প্রতীক্ষায় |

নতুন করে দেবার, কিছুই তো নেই আজ আর
জীবনটা কিছু রয়ে গেছে বাকী, শেষের অপেক্ষায়
তাই দিলাম তোমাকে উপহার ||

নীল কবিতা



দাঁড়িয়ে আছি তোমার স্মৃতিতে
মাড়িয়ে জীবনের সব সুখগুলো
জড়িয়ে সব কষ্ট বুকে
ভালোবেসে চলেছি তোমার দেওয়া দুঃখগুলো …..
ছন্নছাড়া জীবনে, ছন্দহারা সুরে
গাইছি গান আপন মনে
ফিরবো জেনো সব বাধা ভেঙ্গে
উঠব জেগে নবজাগরণে ....

বন্দী তুমি আমার স্মৃতিতে
প্রজাপতির পাখায় চেপে দিই পাড়ি নীল সীমান্ত
আমি মাঝি, তুমি আমার ছোট্ট ডিঙ্গি
ছুটছি আড়াল করে জনসমুদ্র ...
প্রকৃতির নিয়মে বাড়ছে বয়স
পরিবর্তনের ধারায় বদলেছে সীমানা
আমি কবি, তুমি আমার কবিতায়
ছন্দের কারুকাজে আজও চিরযৌবনা....

আমি পথিক - কুড়াই জলের পাল



আভিমানী সূর্য্যটা লুকালো কালো মেঘের অন্তরালে
চুপি চুপি নিভৃতে ভাসালো দুচোখ অশ্রুজলে
সদ্য স্নাত মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তর, টিলা-পর্বত
অবাক দৃষ্টিতে, জলধারার উৎস খুঁজে
পুকু্‌র, নদী, সমুদ্রের জলতরঙ্গের ভাঁজে ভাঁজে |

পেশাদার সময়ের সগর্ব আধিপত্য আড়াল, ক্ষণিকের ভাটায়
ভরে উঠে হৃদয় জলমতির কোমল সূরের মূর্ছনায়
আবেগী মন ছুটে স্মৃতির ক্রোড়ে
ক্লান্তি আড়াল প্রাপ্তির উষ্ণতায়
আমি পথিক কুড়াই জল
বাড়াতে চোখের সঞ্চয়, ফোঁটায় ফোঁটায় |

ফিরে এসো _ _ _ _

চোখের অশ্রু ফুরিয়ে গেছে সেই কবে
কলমের অশ্রু তাই ধার করেছি
মুখের ভাষায় সাড়া মেলেনা তাই
কবিতায় তোমার নাম ধরে ডাকছি
ফিরে এসো _ _ _ _
ফিরে এসো আমাতে |

বর্ষাতে যে প্রেম শুরু
শরৎ এ তা নিভু নিভু
ঝরা পাতার গাছে ফুটলনা ফুল বসন্তে
ভুল বুঝে আমাকে
অভিমান পুষে বুকে
মরিচীকা হয়ে হারালে সৃত্মিতে ||

পথ হারা পাখীরা
আকাশের সীমানা ছুঁয়ে
ফিরে আবার সবাই নীড়ে
শেষ বিকেলের ট্রেনটাও
ফিরে গেল গন্ত্বব্যে
এলেনা শুধু তুমি আর ফিরে ||

অসময়ের সেই প্রেম

প্রেম যদি হয় লাইলীর মত
মজনুরে তোর কিসের ভয়
তুমি যদি পাশে থাকো বন্ধু
একদিন করবো ঠিকই বিশ্বজয় |

খোলা চুলে ব্যালকনিতে দাঁড়াও যখন
আম্মাজান তোমার পাশে রয়
আব্বাজানে হুড উঠিয়ে রিকশায়
প্রাইভেটে যাওয়ার সময়...
এক নজর দেখার লাইগা বন্ধু
কত টেনশন, খুজি কত ফাঁক ফোকর
বল কেমনে আমরার দেখা হয় ?
তুমি যদি পাশে থাকো বন্ধু
একদিন করবো ঠিকই বিশ্বজয় ||

কলেজে যাওয়ার পথে
বড় আপুরে ভীষন ভয়
ছাদে উঠলে বিকাল বেলায়
আমার শালা পাহারায় রয়...
একটু ভালোবাসার লাইগা বন্ধু
কত মানত, করলাম কত জিকির
বল কেমনে আমরার মিলন হয় ?
তুমি যদি পাশে থাকো বন্ধু
একদিন করবো ঠিকই বিশ্বজয় ||

আমি আর এক গুচ্ছ বৃষ্টি

আজ মেঘের কান্নায় লুকালো সূর্যের হাসি
আমি আর স্মৃতি দুজন বসে পাশাপাশি
আকাশের সব নীলগুলো আড়াল, মেঘের ভাঁজে
ক্ষণে ক্ষণে দিচ্ছে উঁকি, মরিচীকার সাঁজে ......
টিপ টিপ বৃষ্টির রংহীন জলধারা
চোখের জলে মিশে বইছে কষ্টের ফোয়ারা
তৃষ্ঞার্ত এ ধরা চঞ্চল, জলের স্রোতে ভেসে
প্রকৃতির সব প্রানগুলো নীরব, হঠাৎ অবকাশে ........
প্রেমময় এ লগ্নে, কাঁদছে হৃদয় দীর্ঘশ্বাসে
ঝরা সৃত্মির চাঁদরে মোড়ানো তোমার স্পর্শে
কি যে হল আজ, কাটছে সময় বিষাদে
ফিরতে চাইছে মন আবার অতীতে |

রেডি হচ্ছে বাংলাদেশ !!!

মাঝরাতে সহসা আযানের ধ্বনীতে বস্তিবাসী স্তম্ভিত
শত শত কোটি টাকার ঋণের বোঝা মাথায় চেপে
আরও একটি গিনিপিগের আগমন
এই দূর্মূল্যের বাজারে জন্ম নিল মূল্যহীন তরতাজা আরও একটা প্রাণ
একে ঘিরেই হবে একদিন
কারো বাবা কিংবা স্বামীর স্বপ্নের বাস্তবায়ন

রেসের ঘোড়া হয়ে কিছুদিন পর দৌড়াবে
মৌলিক সব চাহিদা পূরনের তাগিদায়
ভোর হবে তার পূবের সূর্যকে স্বাগত জানিয়ে
রাত গুটিকয়েক সমাজপতিদের ইশারায় ...

এখানে কাটবে দিন ট্রাফিক জ্যামে আটকে লোকাল বাসে ঝুলে
রাত মশা মাকড়ের সাথে বিছানায়
বাড়বে বয়স কখনও জলাবদ্ধতা সয়ে
গ্যাস স্বল্পতা আর লোডশেডিং এর যন্ত্রনায় ...
এখানে সব পাখী মাছ খাবে ঠিকই
দোষ সবই মাছরাঙ্গার
সাদা চামড়া, কালো চামড়া মূল্যহীন সবই
দামী দেহ যদি হয় গন্ডারের চামড়ার ...

ধর্ম কর্ম ভুলবে হয়ত জঙ্গীবাদ কিংবা জাতিগত শত দ্বিধা দ্বন্ধে
বাংলাদেশে জন্মেছে তাই
শেষ সু্যোগ পাবে কলেমা তৈয়ব পরার
র‍্যাব পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে |

অপেক্ষা .............(২)

সময় বয়েছে নদীর স্রোতের মত
থেমে থাকেনি তোমার দেয়া হাত ঘড়িটাও
তাজা গোলাপের পাপড়িগুলো ঝরে পরেছে সে কবে
ঝরে পরেছে নিরেট দেয়ালের সব পলেস্তরা
বেড়ে উঠেছে আঁকাবাকা ফাটলের ফাঙ্গাসগুলো
সোনারাঙ্গা রোদের ঝিলিকে
ঝরে পড়েছে ভোরের সব শিশিরকণা
সূর্য্যটাও অপেক্ষা করেনি চাঁদের
রাত এল পরিপাটি কিছু স্বপ্ন নিয়ে
স্বপ্নগুলো পথ চেয়ে থাকেনি বাস্তবতার
চিঠিগুলো জানি ঠিকই পৌঁছেছে তোমার ঠিকানায়
উত্তর নিয়ে এলোনা শুধু রানার
কপাটদুটো আজও বন্ধ দক্ষিণা জানালাটার
অপেক্ষায় থাকেনি বিহঙ্গ পবনের
অপেক্ষা করেনি কেউই
এমনকি তুমিও
অপেক্ষা করেছি শুধুই আমি
জানিনা, এ অপেক্ষার শেষ কোথায় .....

গন্ধম: হে মানব তোরে ছাড়ব না

দেহ গড়লা দিয়া মাটি অন্তর দিলা অন্দরে
অন্তর আমার ভ্রমন করে অচীন মনের বন্দরে
হৃদয় দিলা বাসতে ভালো বাউলা করে দিলা মন
মন উড়ে যায় নিরুদ্দেশে কেমনে মানি সংসার ধরম ?
ডিঙ্গি নৌকা ভাঙ্গা বৈঠা করলা দরিয়ার মাঝি
দিশা ভ্রষ্ট পবন রুষ্ট দরিয়া কেমনে দিব পাড়ি
আঁকা বাঁকা পথের দুধারে সাজাইছ রংমহলের পশরা
বন্ধু বান্ধব, আরাম আয়েশ বিনে কেমনে পথ চলি ?
ধ্যান ধারনা মূল্যবোধ আচার আচরণ
রঙ্গীন সপ্নে রংহীন সবই দিলাম জলাঞ্জল
পূন্য করব পূন্য দেখব পূন্যে গড়ব জীবন
গন্ধম আমায় ছাড়ে নারে,
ইহলোকের নেশায় পরলোক দিলাম বিসর্জন ||

লাগামহীন ইচ্ছেগুলো বাস্তবতায়

ধরো যদি হতেম আকাশ তুমি লাল নীল রঙের মেলা
তোমায় নিয়ে সাদাটে ক্যানভাসে আঁকতাম ছবি সারাবেলা
তপ্ত মরু হতেম যদি তুমি ছন্নছাড়া বালুকনা
মুষলধারে বৃষ্টি নামিয়ে তোমায় নিয়ে করতাম খেলা
হতেম যদি মুক্ত বাতাস তুমি নাটাই ছেড়া এক রঙ্গীন ঘুড়ি
তোমায় নিয়ে হারিয়ে যেতাম দূর, সুদূর অজানা দিতাম পাড়ি
পাহাড়ী ঝর্ণা হতেম যদি তুমি ঝরে পড়া এক গুচ্ছ বনফুল
স্রোতের টানে খোঁজতাম দিন রাত সাত সমুদ্র তের নদীর কূল......
আদতে তুমি চন্দ্র আমি সূর্য ঘুরছি চক্কর একই দিকে
তোমার কাছে এসে দেখি তুমিও গেছ আমার ঠিকানাতে
জলের কাছে তোমায় খুঁজি জল বলে তুমি গেছ আকাশ বিহারে
আকাশে এসেও পাইনা খুঁজে বৃষ্টি হয়ে ঝরেছ মাটির বুকে .........

স্বপ্নচর

আমি তোমার কপালে টিপ করে পড়াই আকাশের ঐ চাঁদটা
মেঘের ভাঁজে বৃষ্টি করে অঝরে ঝরাই ভালোবাসা
রোদেলা অরণ্যে সবুজের শাঁখে শিশিরে জানাই আহবান
আর পাহাড়ী ঝর্নার কলতানে গুনগুনিয়ে গাই গান |

আমি তন্দ্রা হয়ে আসি তোমার দুচোঁখে, অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে
সঙ্গোপনে আলতো ছোঁয়ায় ছুঁয়ে যাই ললাট অভিলাসী চুম্বনে
আমি পাখির মত ডানা মেলে হারাই দূর নির্জনতায়
তোমায় নিয়ে বাঁধি ঘর সুখে,সুখের নীল নীলিমায় |

আমি দুচোখ মেলে দেখি আমার স্বপ্নের অসহায় আত্মসমর্পন
তুমিহীনা বিছানায় এপাশ ওপাশ গড়িয়ে আরো কিছু সময়ের বিসর্জন
আমি স্বপ্ন শেষে হয়ে যাই সাধারণ একজন
আর একটা স্বপ্নের আকাঙ্খায় আবার করি আয়োজন |

সৃষ্টিকর্তা- তুমিও কি কাঁদ?

হৃদয় আছে জানি,
আছে জানি ভালোবাসার মত মন
তবু কেন ?
স্বপ্ন জাগিয়ে নিমিষেই আবার করো আশাহত
বিষম খেলোয়াড় তুমি
গড়েছ খেলার সব রীতিনীতি
প্রতিদ্বন্ধীর অভাবেই কি খেলছ ?
আমাদের নিয়ে অবিরত

সৃষ্টির বিধাতা, সৃষ্টির উল্লাসে
বুঝতে কি পার? কি ব্যাথা বিরহে
আছে ক্ষমতা, ভেঙ্গে আবার গড়
তাই বুঝি মেতেছ ভাঙ্গাগড়ার খেলাতে?
মেঘলা দিনে বৃষ্টি ঝরাও আকাশে
ঝরিয়ে দেখ কি জ্বালা দুচোখে
যে ভালোবাসা তোমার দান
নিজেও বেসে দেখ কভু, বুঝবে কি ব্যাথা হারালে

কাপুরুষ আমি নই !! ... তবে

ক্লান্তিতে নিভে গেছে জনপদের সব প্রাণগুলো
জ্বলে আছে শুধু ট্রাফিক সিগন্যালে সোডিয়াম আলো
ঝিমিয়ে পড়েছে ব্যস্ত রাজপথ, আড্ডারত বিচ্ছিন্ন অলি গলি
ঘুমিয়ে পড়েছে ফুটপাতে অবহেলিত আগামী |
মহাকালের ব্যার্থতার সাক্ষী এ অমানিশায়
জেগে আমি একা, আর একটা মৃত্যুর অপেক্ষায় ......
ধমনীর প্রতিটি রক্তকনায় বহমান পাপের ধারায় চড়ে
জন্ম জন্মান্তরে বয়ে বেড়ানো মিথ্যে অহংকারে
কাপুরুষ হয়ে মরি প্রতিদিন
বেঁচে উঠি আবার ঘৃণ্য প্রাণের স্পন্দনে
মহাপুরুষত্বের দৃঢ় প্রত্যয়ে, উৎসৃঙ্খলতার নগ্ন আনন্দে
বারংবার মৃত্যু কাপুরুষত্বে, আজ নয় কাল এই চির দন্ধে ......

বেলতলায় আর যাবনা

হুড উঠিয়ে রিক্সায় এখন আর চড়তে হয় না
অনিচ্ছা সত্বেও তুমুল বৃষ্টিতে অনর্গল ভিজতে হয় না |
রিফিল করেছি সেই কবে
বেরসিক ব্যাল্যান্স এখন আর ফুরোয় না
একান্ত গোপনীয় মেসেজ কেউ পড়ার ভয়ে
লুকাতে হয় না সেলফোনটা |
ম্যাচিং ড্রেস আর দামী পারফিউম
ব্যবহারের এখন আর নেই বালাই
গরম গরম ডালপুরীর সাথে
পেঁয়াজ খাওয়ায়ও কোন নিষেধ নেই |
এই দিবস ঐ দিবস মনে রাখায় ছিল ঝামেলা কত
প্রতিদিনটা এখন নিজের মনে হয়
কারো কোন নেই অভিযোগ |
সকাল সকাল ক্লিন শেভে নায়ক ভাব আর নিতে হয় না
খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে কারও আর নেই অনীহা |
রবীন্দ্রনাথ জীবনানন্দ কড়া নাড়ে কর্নকুহরে
মনে তবু কোন ভাব আসে না
ইমেইল, এস.এম.এস.-এ নতুন নতুন শব্দের খোঁজে
পকেট ডিকশেনারিটা সাথে রাখতে হয় না |
অনেককিছুই বদলে ছিলাম, ভুল বুঝেছিল বন্ধু স্বজন
আর কখনও বেলতলায় যাবনা তোমার নামে খেলাম কছম !!!

জীবন যেখানে সমাপ্তির অপেক্ষায়

হঠাৎ এক দমকা ঝড় হাওয়া
নিজেকে আবিষ্কার করলাম এক অভিশপ্ত জীবনে
কাক ডাকা ভোরে দুচোখ নিংড়ে ঘুম
আর সারারাত স্মৃতির সাথে এলোমেলো কথপোথন
হাসপাতালের মর্গে কফিনবদ্ধ বেওয়ারিশ সব স্বপ্ন
মন দেহ হৃদয় পাজলের মত টুকরো টুকরো
একে অপর হতে বিচ্ছিন্ন
মাঝে মাঝে ফটোফ্রেমে মুচকি হাসা
অশরীরি এক নারীর সাথে সময়যাপন
বড় যত্নে ‌র‌্যাপিং পেপারে মোড়ানো
মানিব্যাগ হাতঘড়ি সানগ্লাসে তাকিয়ে স্মৃতি রোমন্থন
জীবিকার তাগিদে কিছুটা হিসেবী পথচলা
পথশেষে আবার বেহিসেবী আমি একজন………

আজ কাটুক দিন তোমাতে

আঁকব আলপনা তোমার চলার পথে
জোৎসাছোঁয়া পানিতে ভাসবো আজ দুজনে
বনফুলে সাজাব বাসর রোদেলা অরণ্যে
হারাবো নীর্জনতার ধোঁয়া ধোঁয়া গহীনে
নীল সুনীল দূর দিগন্তের গভীরে
পাখির মত ডানা মেলে যাব উড়ে
মনের না বলা গোপন কথাগুলো
জানাব মেঘের খামে চিঠি লিখে |
প্রিয়া যাবে চলে, যাও যত দূরে নেই অভিযোগ
অনুরোধ আজ দিনটা দাও আমাকে
সারাজীবনের অধরা সুখগুলো দাও উপহার
এই দিনটাকে গেঁথে স্মৃতিতে |

বর্ণহীন আবেগী নোনা জল

তুমি পান করেছ কি নোনা জল ?
অফুরন্ত নোনা জল, বর্ণহীন আবেগী নোনা জল
যা দিয়েছিলে তার সবই তো পেলাম ছল
রয়ে গেল শুধু সেই নোনা জল |
তুমি চলে গেলে সাথে ভালোবাসাও গেল
সুখ, সুসময়, চাওয়া পাওয়া একে একে সব ছেড়ে গেল
ছেড়ে গেল না শুধুই নোনা জল |
যেতে যেতে আমায়ও আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিলে
স্বপ্নে আসতে, এখন স্বপ্নেও দেখা পাওয়া দুস্কর
স্মৃতিগুলো আগলানো ফ্রেমে, বড্ড পুরুনো অপরিচিত মনে হয়
দুঃখগুলো যেন প্রতিনিয়ত নতুনত্ব পায়
আর নতুন সাঁজে ঝরায় নোনা জল - - - - - - - - - -
অভিশাপ নয়
আমায় মনে করে একদিন তুমিও পান করবে নোনা জল |

প্রতিশোধ

কতটা ভালোবেসেছি মেপে দেখিনি
কতটা ভালোবেসেছো কখনও জানতে চাইনি
শুধু জানি আমার মাঝে আজ আমি নেই
নিরেট দেহের খোলসের অন্তরালে কোন প্রান নেই
তোমার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে
আমি মুছে দিয়েছি আমার অস্তিত্ব |

কতটা যন্ত্রনা সহ্য করতে পারি মেপে দেখিনি
কতটা জ্বলে যেতে পারি সে প্রতিযোগীতায়ও নামিনি
‘আমি’ খুব প্রিয় ছিলাম তোমার
তাই নিজেকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে অবিরত
তোমার উপর নিচ্ছি প্রতিশোধ |

আজীবন দন্ডপ্রাপ্ত এক কয়েদীর আত্মকথন

বর্ষণমুখর এক অতৃপ্ত সন্ধ্যা
একটি সপ্ন, দুটি প্রানের অপমৃত্যু
দায়ী কে ?
হয়তো আমি, হয়তো তুমি
হয়তো আমার মতই ভাগ্যাহত আমাদের নিয়তি
কন্টকাবৃত একটা পথ অবশ্য খোলা ছিল
সাহসের বড্ড অভাব ছিল বুকে
সমাজের ভয়ে
পরিবার পরিজনের সংশয়ে
সম্পর্কটাকে নিজ হাতেই গলাটিপে হত্যা
প্রচন্ড যন্ত্রনায় অনুভব করলাম
আমারই দেহের একটি অংশ
অন্য একটি দেহে প্রতিস্থাপন
আর আজীবন দন্ডে দন্ডিত হয়ে শুরু হলো
নিঃসঙ্গ একাকী এক অভিশপ্ত জীবনযাপন |

WE--The People !!!!

বেরিয়ে আসতে চাই চক্রকার এই বাঁধন ছিড়ে
একই শাসন একই শোষন আর একই অভিশাপ ঘুরে ফিরে
ভেসে যেতে চাই প্রবাহমান স্রোতের বিপরীতে
পরিবারতন্ত্রের ধাপ্পাবাজি ডিঙ্গিয়ে নির্ভেজাল উত্তরণের পথে |

আমরা চাইনা বর্তমানে
অতীত ফিরে আসুক সদর্পে
কেউ কি আছো সাড়া দেবে ?
বন্ধুত্বের হাত বাড়াবে দেশ গড়তে ||

সু-দিন একটু হেসে আবার নিমিষেই ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে
সম্ভাবনা ঘুমিয়ে পড়ে ভূল দরজায় কড়া নেড়ে
স্বপ্ন সাজাই বারেবারে বছর পাঁচেক বিরতিতে
বিস্তর ফারাক প্রতিনয়ত প্রত্যাশা আর প্রাপ্তিতে

আমরা যেমন আছি তেমনই থাকি
থাকি ঘুর্ণায়মান একই আবর্তে
কেউ কি আছো সাড়া দেবে ?
ভাসাবে মুক্তির উৎসবে ||

ঈশ্বর আমি, মাতি রোজ নতুন সৃষ্টির উল্লাসে

বিন্দু বিন্দু জল, সিন্ধু করে গড়াই কখনও চোখের কোনে
ভুলে যেতে পারি, তবু জিইয়ে রাখি তোরে আমার মনে
স্বপ্নের ক্যানভাসে, তুলির আঁচড়ে আঁকি তোরে নিজের মত করে
প্রানবন্ত উপমায় সাজাই কবিতাতে, লেখা যত সবই তোকে ঘিরে
তুই সৃষ্টি আমারই
মনের মাধুরীর ছোঁয়াতে রাঙ্গানো তুই একজনই
পুরানো তোকে ধ্বংসে মাতি রোজ
গড়ি আবার নতুন করে...............।
চৈত্রের প্রখরতায়, প্রকৃতি দিশেহারা হয়ে রয়
তবু বৃষ্টি নামাই তোরই সস্তিতে
কখনও সমুদ্রস্নানে, কখনও জোৎস্নাবিহারে
ছুটি তোর মন ভোলাতে ||
মেঘে ঢাকা রাত, কালো বিষাদে ঢাকা আকাশ
তবু চাঁদকে হাসাই তুই হাসবি বলে
রাজ্য আমার তুই আমার অতিথি
ফুল পরীরা উৎসবে মাতে ফুলে ফুলে ||

শব্দের মরীচিকায় এলোমেলো ভাবনাগুলো

রংধনুর সাত রঙ্গা শাড়ীতে
কপালে ধূসর নীল টিপে
এলো চুলে আলতো এসে
দাঁড়াও চুপি চুপি আমার পাশে...
ময়ুরকন্ঠী সবুজ তোমার চাঁহনী
অপলক তাকিয়ে থাকে আমায়
ইচ্ছে ঘুড়ি লাটাই ছিড়ে
চলে যায় দূর সুদূরে

ভিজে চুপিসার বৃষ্টিতে আমার মন
তোমায় খুঁজে আশ্রয় সারাটা ক্ষন |

নিকষ কালো আমার ঘুমে
আসো রঙ্গীন আলো রাঁঙ্গিয়ে
ঝাপসা ঝাপসা মনের আশা
মিটাই দুজন, ভালোবাসা অন্তহীন
নেই সীমানা, নেই কোন প্রাচীর
নেই কোন বন্ধন
ইচ্ছে করে ঘুমিয়েই থাকি সারাটা জীবন |

জীবনের সব ‘প্রথম’গুলো

গোল ডায়ালে তিনটি কাঁটা ঘুরত সদা চক্রাকার
চাচার দেয়া সোনালী ঘড়িটাই ছিল আমার পাওয়া প্রথম উপহার |
প্রথম চাকরী বাসার পাশের নষ্ট ট্রাকে
বিনে পয়সার ড্রাইভার |
প্রথম বাজার ফিরিঙ্গী বাজারে
প্রথম কেনা খাঁটি পুকুরের জ্যান্ত পঁচা মাছ |
স্কুল পালিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর কনসার্টে
পেয়েছিলুম জীবনে প্রথম মুক্তির স্বাদ |
চুলের ছাঁটে প্রথম প্রথম
দিয়েছিলুম রাহুল কাঁট |
প্রথম জিনস টি-শার্টে লেগেছিল
হুবুহু সালমান খান |
আমার বুকে ছিল একজন তার বুকে আছি কি আমি ?
খুঁজতে গিয়ে লেগেছিল কলেজের প্রথম বছরটা |
দিস্তা দিস্তা কাগজ আর ডজন খানেক কলমে বয়েছিল ঝড়
রবিঠাকুর আর জীবনানন্দের আশীর্বাদে
অবশেষে লিখলুম প্রথম লাভ লেটারটা |
প্রথম প্রেমের অনুভূতি
ঘোমড়া তোমার মুখে যেদিন পেলুম একটু হাসির ঝিলিক |
অল্পদিনেই প্রথম ছ্যাঁকে
লেগেছিল ধোঁয়া ছাড়ার হিড়িক |
প্রথম লজ্জায় লাল হলেম
বোনজামাই ডেকেছিল যেদিন প্রথম শালা |
চাপা হাসি আর দুষ্টু কথায় কেটেছিল
প্রথম বাসর রাতটা |
প্রথম দ্বায়িত্ববোধ জেগেছিল যেদিন
ফিসফিসিয়ে বলেছিল বউ আমার সন্তানের আগমনবার্তা |
খুশীতে প্রথম চোখ ভাসিয়েছিলাম
যেদিন হয়েছিলুম প্রথম বাবা |


সংক্ষেপিত ও আশা করি চলবে............

তুমি আমার .............

শব্দের যাদুয় লিখছি কবিতা
গড়ছি তোমায় মনের মতন
আমি তোমার জীবনানন্দ
তুমি আমার বনলতা সেন
তুলির আঁচড়ে সাজাই ক্যনভাস
স্বপ্ন আঁকি দিয়ে ভালোবাসা
আমি তোমার লিওনার্দো
তুমি আমার মোনালিসা
সেলুলয়েডের ফিতায় বন্দী গল্প
প্রাণ সৃষ্টির অপরূপ প্রয়াস
আমি তোমার শরৎচন্দ্র
তুমি আমার সৃষ্টি দেবদাস
সুরের মায়ায় গড়ি ধুম্রজাল
গানের স্বরে কথা বলি
আমি তোমার হেমন্ত
তুমি আমার গানের স্বরলিপি |

যাই বলি তুমিই তুমি
তুমিইতো আমার সবই
খুঁজে দেখ পাবে কি
আর একটা আমায় তুমি
হাসলে হাসি কাঁদলে কাঁদি
ভালোবাসি যতই দাও ব্যাথা অভিমানে
সুখী আমি তোমায় পেয়ে
আর কিছু চাওয়ার নেই
তোমায় পেয়েছি যে জীবনে |

তুমি আমি আর আমার তৃপ্তিহীন ছুটে চলা

পেশাদার স্বপ্নে বিভোর আমার চঞ্চল অবয়ব
অহেতুক বন্ধনে শৃঙ্খলাবদ্ধ আমার অতৃপ্ত সময়
যান্ত্রিক সময়ের চাহিদায় যন্ত্র নির্ভর ভালোবাসা
শুধু তুমি আর আমি
জানি এর মাঝে নেই কোন কৃত্রিমতা |
জ্যাম খাওয়া রাস্তায় আটকে আগামীর সম্ভাবনা
আমি ছাড়া সবাই ছুটে চলছে আমি দিশেহারা
একাধিক পথ ছুটে চলে একই গন্ত্বব্যে
কর্দমাক্ত পথটাই বেছে নিয়েছি সময় স্বল্পতার লক্ষ্যে |

দিন কাটে সময় বয়ে যায়
বিবর্ণ আমি চেয়ে রই শুন্যে
থাকি আকসাৎ কোন এক চমকের অপেক্ষায়
জীবনের সব উল্লাস সব আবেগ বিসর্জনে
চাই শুধু তুমি সুখী রও জীবনে ||

সাইক্লিক জীবনধারা

মাটির এই শরীরের কত রূপ কত রঙ জীবনের
শৈশব কৈশোর যৌবন পৌঢ় সময়ের কতক রকমফের
অবিবাহিত বিবাহিত কর্তৃত্ব একক থেকে দ্বৈতের কোটায়
জন্ম বিয়ে মৃত্যু তিন ধাপে গড়া জীবনের তিন অধ্যায় ……

একই বলয়ে চক্রমান জীবন নদী বয়ে যায়
পথ শেষে ফেরে আবার শুরু ঠিক যেখানটায়
আমি আছি সেই শেষের অপেক্ষায়
আবার যদি নতুন করে সবকিছু শুরু করা যায় ||

মেঘের দেশে স্বপ্ন চাষ

জোৎস্নাহীনা রাত গহীন আধার রংহীন বৃষ্টি পড়ছে টুপুর টুপুর
পিপাশার্ত আকাশটা জলের প্রাপ্তিতে দিচ্ছে বারে বারে তৃপ্তির ঢেকুর
বৃষ্টিস্নাত অপরূপ চারিধার যেন কোন কবির সাজানো ক্যনভাস
প্রেম ভালোবাসা জাগানিয়া মুহুর্তের বিমোহিত স্বপ্নকাতর অবকাস |

চলনা ভিজি আজ দুজন মিলে হারিয়ে যাই গহীনে ডুবসাতারে
জগৎ সংসার থাকনা পড়ে চল জীবন গড়ি আবার নতুন করে
স্বপ্ন বুনি স্বপ্ন ফলাই চল তারাহীনা সূদুর ঐ মেঘের দেশে
তুমি আর আমি দুজন মিলে কাঁটাই কিছুদিন স্বপ্ন চাষে |

একাত্তরের বীরঙ্গনা বলছি ..

আমার পড়নের কামিজ ফাটা
সেলোয়ারে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ
অনিশ্চিত ভবিষেৎর বিভীষিকা দুচোখে
ভিনদেশী পরগাছা করছে দেহে বসবাস |
টিনের ফুঁটোয় আকাশ উঁকি দিয়ে তাকায়
বৃষ্টির ফোঁটা মেঝেতে দাগ রেখে যায়
নড়বড়ে খুঁটি বইতে পারেনা চালের ভার
পোকার অত্যাচারে বিবর্ন দেয়াল করে আর্তনাদ |
বক্তৃতার মঞ্চ কাঁপে আমার ইতিহাসে
নতুন দিনের স্বপ্নে দিন কাটে আঃশ্বাসে
বয়ে যায় সময় চলে যায় কত সরকার
রয়ে যায় অধরা আমার না পাওয়া অধিকার |

একাত্তরের বীরঙ্গনা বলছি শোন হে জনতা
মনে কি রেখেছ কেউ আমার কথা ?
কি চাইলাম আর কি পেলাম উপহার
হারিয়ে সম্মান পেলাম তার কি প্রতিদান ?
স্বাধীনতার মূল্যে বিকিয়েছি নিজের সম্ভ্রম
দেশের সম্মান রাখতে খুইয়েছি আত্মসম্মান
একটি প্রশ্নই আজ উঁকি দেয় মনের কোনে
তোমাদের লাল সবুজে আদৌ কি আছে আমার অবদান ?

আমি ও আমার নিঃসঙ্গতা

দিন কাটে একা
নাই তোমার কোন দেখা
হঠাৎ কোথায় যেন হারালে
বিষন্নতা বাসা বাঁধে গোপনে
অবসাদ নিঃশ্বাস ছড়ায় মনে
চঞ্চলতা বিলীন, জীবন থেকে .......

সময়ের সাজটা স্তব্ধতায় বিমূখ
আলস্যে ভরা প্রহর কাটে চোখের জলে
শৃঙ্খলহীন জীবনটা আজ বড়ই বেমানান
অসীম কষ্টগুলো চাপে আড়ালে |
বলেছিলে আজীবন রবে সাথে
তাই কি আজ নেই পাশে ?
অন্ধ ভালবাসার প্রতিদান
নিঃসঙ্গতায় দিলে..................

প্রেম বলব একে নাকি বলব দ্বাসত্ব

ঘুম ছিল দুচোখ জুড়ে, তবু কেন যেন ঘুম হলো না
তোমায় নিয়ে আর একটা স্বপ্ন, দেখা হল না
এই ভেবে ভয়ে আছি, আছি ভীষন চিন্তিত
কখন অভিযোগ করে বস, স্বপ্ন থেকে কেন বিতাড়িত ?

বুকটা জুড়ে তুমিই আছো, মনটা তোমার কেনা
একটু উনিশ বিশে তাইতো, মেলো অভিমানের ডানা
হঠাৎ কখন বলে বস, আকাশে মেঘ কেন ভাসে
সাত সমুদ্দুর পারে নিয়ে, চল আমায় ভালবেসে |

ভালো এত বাসি তাই কি, আমায় নিয়ে খেল ?
ঘুড়ি হয়ে যতই উড়ি, লাটাই ধরে রাখ
কখন যেন বলে বস, আকাশটা কর রঙ্গীন
রাতটা বড় একঘেয়ে লাগছে, করে দাওনা দিন |

ধূলো জমা কবিতা

ডায়রীর মলাটে ঝং ধরেছে
পাতায় জমেছে ভীষন ময়লা
কলমের নিবে ধার নেই আগের মত
ছন্দ করে না আর খেলা
বয়সের ভারে দেহ ঝুঁকেছে
চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা
আঁচড়া বিহীন চুলের মাথায়
আসেনা নতুন কোন ভাবনা

কবিতা তোরে খুঁজে যাই
খেলবি কত আর লুকোচুরি ?
এদিক ওদিক হাতরে মরি
তোর আভাগা কবি ||

রাজপথে আলোর মিছিল
আলো নেই আমার মনে
রাতের করাল অন্ধকার হাসে
সূর্য রাঙ্গানো দিনে |
মেঘহীন সুনীল আকাশ
মেঘ লুকিয়েছে আমার মাঝে
চোখের নদীর বাঁধ ভেঙ্গেছে
জল পরে উপচে |

অবহেলিত আজ আমি
রঙ্গীন জীবন রঙ হীন
চড়া দামে স্বপ্ন বিকোয়
আমার স্বপ্নরা মূল্যহীন |
দ্বিধায় ভুগি কখনও
আদৌ কি বেঁচে আছি
বিরামহীন নিঃশ্বাস জানায়
খাঁচা ছাড়েনি প্রান পাখি |

কবিতা তুই আমার ছিলি
যাসনি কখনও ভুলে
হারিয়ে গেলে দূর অজানায়
কবির নামটি রাখিস মনে ||

আমি নারী ……আমি কি সমাজের বোঝা ?

একটু একটু সপ্ন বুনেছি নকশিকাঁথার মত
নিজে আলো পাইনি তবু চেয়েছি হোক সবাই আলোকিত
শৈশব থেকে যৌবন দিন কেটেছে যত
বুঝে গেছি আমি মেয়ে তাই অবহেলিত |

সমুখের খোলা পথটায় কতইনা হেঁটেছি
কল্পনায় কত পথ চলে আর ফিরে আসিনি
বদ্ধ এ ঘরটাতে বন্দী হয়ে তাকিয়ে খোলা জানালায়
কতদিন লুকিয়ে লুকিয়ে আমি কেঁদেছি |

জীবনের কত রং সমাজের কত পরিচয়
সম্পর্কের বেড়াজালে নিজেকে জড়িয়েছি
আজন্ম এক পাপ মেয়ে হয়ে জন্মে
কত কষ্ট কত যন্ত্রনায় জন্ম থেকে জ্বলছি |

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

কখনও মায়ের প্রিয় সন্তান তুমি বড়ই গর্বের ধন
কখনও সুবোধ বালক তুমি, অশান্ত যার মন
কখনও বৃষ্টি শেষে আকাশের নীল খুঁজে ফেরা এক পথিক
কখনও পাতায় সবুজ আর গোলাপে লাল খোঁজা এক প্রেমিক |
কখনও সন্তানের প্রিয়মুখ বহু আরাধ্য একজন পিতা
কখনও বক্তৃতার মঞ্চ কাঁপানো এক বিশ্বনেতা
কখনও রণক্ষেত্রে অগ্রজ এক সমরনায়ক
কখনও এক দেশ এক জাতি প্রশ্নে এক আহবাহক |

কে তুমি কেমন তুমি ? বিশ্বের কাছে কিছুই অজানা নয়
রবে তুমি অমর যতদিন রবে বাংলাদেশের পরিচয়
কীর্তিমানের মৃত্যু নেই তুমিই তার জলন্ত উদাহরণ
কিংবদন্তী তুমি , তোমার নেই কোন ক্ষয় ....................

অপরাহ্নে কাব্যচাষে উৎপাদিত কবিতা

যতই রাখি আগলে তারে ততই চায় যেতে উড়ে
দেহের মাঝে প্রাণ থাকে মন থাকে না দেহে
একই দেহে আজীবন বাস করি কি করে ?
সূতোয় গড়া পোশাকের খাঁচায়
বন্দী করে দেহ রাখি যৌবনের মায়ায়
লাগাম ছাড়া বয়স কি আর খাঁচায় বন্দী হয় ?
মেঘে মেঘে গেল বেলা
সাঁঝ উঁকি দেয় অচীরেই শেষ হবে সব রঙ্গশালা
এক জীবনে খেলব কতো আর রং তামাশার খেলা ?
নিষিদ্ধ আহবানে দিয়ে সাড়া
পুণ্যের খাতা হয়নি খোলা পাপের খাতা ভরা
একই খাতায় মেলাই কি করে পাপ পুণ্যের হিসাবটা ?

বিশেষ তুমি - তাই তোমার জন্য বিশেষ কবিতা

বিশেষ দিনে
ডেকেছিলে বিশেষ বিশেষণে
বিশেষ করে
বিশেষ ক্ষণটা পড়ছে ভীষন মনে |
এই সে পথে হেটেছিলাম
হাতে হাত রেখে
বিশেষ দ্যুতি দেখেছিলাম
বিশেষ তোমার চোখে |
বিশেষ ছোঁয়ায় পেয়েছিলাম
বিশেষ অনুভূতি
সাধারন আমার জন্য ছিলে
তাইতো বিশেষ তুমি |
দূরে আছি আজ
তবু যেন দুজন পাশাপাশি
প্রেম মিটেছে মন ভেঙ্গেছে
তবুও ভালোবাসি |
আজ ঠিকই আসবে কাল
আসবেনা ফিরে যা গত
চলো আবার দুজন মিলে
বিশেষ দিনটাকে জানাই স্বাগত |

ডিজিটাল বাংলাদেশ !!!!!!

আবার একটি হত্যাযজ্ঞ
আবার একটি সমাধান অযোগ্য প্রশ্ন
রাষ্ট্রের কাঁধে আর একটি বোঝা
ঘুনে ধরা সমাজের আরও একটি কলঙ্ক
সেও তো কারও সন্তান
কারও নাড়ী ছেড়া সাত রাজার ধণ
কারও ভাই কারও পিতা
স্বামী কিংবা কারও প্রেমিক |
তারও তো স্বপ্ন ছিল আর একটা সকালের
কিছু জৈবিক চাহিদা হয়তো সাদামাটা একটা জীবনের
ঘরে ফিরে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আসার
দর্শক হতে আগামী দিনের সম্ভাবনার
কিন্তু আজ................
আজ একটা নিস্তেজ নিথর শরীর
হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা এক বেওয়ারিশ লাশ
স্যাটেলাইট চ্যানেলের সংবাদকর্মীদের জন্য অনন্য এক নমুনা
খবরের কাগজ কাটতির এক মহা মূল্যবান প্রকাশনা

আমি ও আমার প্রতিদিন

প্রতিদিনই একবার এসে দাঁড়াই এ পথটায়
তাকিয়ে ঐ বন্ধ জানালায়
একবার যদি প্রিয় মুখটা দেখা যায়
সহসা ফিরে যাই, পথে হেঁটে হেঁটে যাই যত দূরে
প্রিয় সে মুখটা ভেসে উঠে দৃষ্টির সীমানায়
শত শত মানুষের পথচলা মিছিলে
আমার আমিকে কখনও পাইনা খুঁজে
বিষ্ময়ে পড়ি, কি করে বেঁচে আছি
নিরেট দেহ প্রাণটাকে খুঁজি
তোমার মাঝে জানি নেই আমি
আমার মাঝে তোমার অস্তিত্ব খুঁজে যাই
প্রতিদিন দূরে সরে যাওয়া ইতিহাসে
একটু একটু করে আমি হারাই |

অপেক্ষা .......... (১)

তুমি আসনি অভিমানে ফিরে গেছে সূর্যটা
ব্যাথা পেয়ে চুপিসারে কাঁদছে দেখো আকাশটা
মাতাল হাওয়াগুলো পথ হারিয়ে
যান্ত্রিক এ নগরে খুঁজে ঠিকানা.......

আমার শুভ্র মন নিঃসীম চারপাশে
অনুভবে খুঁজে যায় রোদেলা জোছনা
দ্বিধাহীন উচ্ছাসে কোলাহল থেমে গেলে
অলীক নীরবতায় এঁকে যায় সৃত্মির আলপনা |
আমার ঘুম ঘুম দুচোখ ভেজা স্বপ্নে বিভোর
উদাস আঁধারের ডাকে দেয়না তবুও সারা
মৃত ইচ্ছেগুলো দাফন হৃদয়ে
হতাশার মিছিলে অবশেষে ঘরে ফেরা......

যে কবিতার কোন মানে নেই

একটি ডায়রী আর একটি কলম
একটি খোলা মন আর কিছু শ্লোগান
প্রতিবাদে ফেটে পড়া কিছু বোবা স্বপ্ন
এ থেকেই কবির কবিতার জন্ম |
সৃষ্টিকর্তা কবির কবিতায়
ছোট ছোট জীবন হাসে কত কথায়
ভাষার কারুকাজে সাজানো স্বপ্ন
ক্যানভাসে আঁকা ছবির মত |
একটি কবি আর একটি কবিতা
শ্লোগান মুখর মিছিলে কোটি জনতা
ঢাল তলোয়ারহীন একটি যুদ্ধ
অসংলগ্নতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠ |
প্রেমিক কবি আর তার সৃষ্টি কবিতায়
সৃত্মিগুলো বন্দী বর্ণের খাঁচায়
অতীত ফিরে আসে সহসা বর্তমানে
হারোনা সব পাওয়া হয় অবাক বিষ্ময়ে |

আহ.....জীবন !!

বেঁচে থাকা নিয়ে চলে কত যুদ্ধ
আজীবন যায়না বাঁচা, তবু কত দন্ধ
জীবনটা লাগে আজ কতটা জীবন্ত
সবার শেষে মরনেই তো জীবন সমাপ্ত
মরন জীবনেরই এক সমীকরণ
মরনেই জীবনের হয় মহামিলন
বেদনা আছে বিয়োগে আছে কিছু ব্যাথা
মরনে মাঝেই লুকিয়ে প্রশ্নাতীত বিধাতা |

কত স্বপ্নে বিভোর হয়ে রাত কাটে দিন আসে
সব আলো ছড়িয়ে দিনও যায় হারিয়ে
কত ভালোবাসা ভরা এ সংসারে
তবুও হারায় সবই হতাশার আধারে
সমাপ্তি সূচনারই এক সমীকরণ
সমাপ্তিতেই হয় সূচনার মহামিলন
দঃখ যদিও কিছু এতে আছে
ভয় নেই আর আবার হবে হারাতে |

কত বসন্ত শত শত ফুল নিয়ে এলো
ঝরা ফুল উপহারে আবারো হারালো
কত ফুলের মালা ছড়ানো এ ভূবনে
তবুও কাটার বসন সবারই পরনে
দুঃখ সুখেরই এক সমীকরণ
দুঃখেই হয় সুখের মহামিলন
অপ্রাপ্তি যদিও কিছু আছে এতে
তবু প্রশান্তি আসবে সুখ দুঃখেরই পরে |

মা গো মা তুই আর আমার নস গো একার

মা গো মা যে স্বরে ডাকি তোরে
জানিস কি তুই ? ছিনিয়ে এনেছে তোরই সোনার সন্তানেরা
তোর সন্তানেরা হারিয়ে গেছে বায়ান্নের রাজপথে গো মা
রেখে গেছে মিষ্টি মধুর এক ঝাঁক বর্ণমালা |

ওরা চেয়েছিল ডাকি গো মা তোরে
ধারে আনা ভীনদেশী ভাষাতে
তোর সন্তানেরা বিলিয়েছে প্রাণ তবু
অটল থেকেছে মাতৃভাষা বাংলার দাবীতে |

চাঁদ যদি গো মা উঠে ঐ আকাশে
দেখাতে কি হয় কাউকে ডেকে ?
যে বীজ বুনেছে তোর সন্তানেরা
তার বৃক্ষ ফলে বিশ্ব তোরে আজ চেনে |

মা গো মা তুই আর আমার নস গো একা
সারা বিশ্বেরই তুই মা
ফেব্রুয়ারীর এই মহালগনে তাইতো
সালাম জানায় বিশ্বের কোটি জনতা |

একটি ভ্যালেন্টাইনস দিবসের উপহার......!!!!!

যে পরিচয় দিতে চেয়েছি তোমায়
সে পরিচয় নিতে তুমি পারনি
যে পরিচয়ে পরিচিত আজ তুমি
জানিনা সে পরিচয়ে সুখী কি তুমি ?

মনে পড়ে আজও অস্হির সেই ক্ষণ
বিয়ে কর, বিয়ে কর, করতে জ্বালাতন
পাত্র খোঁজছে বাবা, উৎকন্ঠায় বলতে কেঁদে
হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলতাম ‘কে করবে বিয়ে তোমাকে ?’

আজকের এ দিনটা কাটিয়েছিলাম দুজনার মত করে
ফিরতি পথে এক বিয়ের কার্ড তুমি উপহার দিলে
ক্ষোভের যন্ত্রনা ছিল মনে, তবু বিদায় দিয়েছি হাসি মুখে
মন তো আর মানেনি, আজও ভাসে চোখ অশ্রু জলে |

একটি প্রেম......কিছু সম্পর্ক.....অতঃপর

নির্জীব ঘড়ির ডায়ালে তাকিয়ে অপলক অপেক্ষায় থাকতাম কত প্রহর
ক্ষণিকের ভালবাসা হারাল অচেনা ঝড়ে হৃদয়ের আজ তাই পূর্ণ অবসর
মলিন আমি, মলিন আমার চাওয়া পাওয়া, মলিন আমার সব আয়োজন
প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসেব মেলেনা সবই যেন মিথ্যে প্রহসন.....

পথগুলো সব পথেই আছে পথ চলা মানুষগুলো ভিন্ন
সেই পথে আমিই একা হেটে চলি ডান বাম দুপাশই তুমি শূন্য
তুমি আছো আছি আমি, তবু নেই আমরা আগের মত
আমাকে হারিয়ে জয়ী তুমি, আমি পরাজিত |

হারিয়ে যাওয়া আমাদের সম্পর্কটা কখনও সত্যি কখনও মিথ্যা মনে হয়
হৃদয় জুড়ে তোমার ছোঁয়া কখনও চেনা কখনও অচেনা লাগে
কখনও কাছে কখনও দুরে তোমার ছবি ভেসে আসে
কখনও বাস্তবে কখনও কল্পনায় হৃদয় নদী জোয়ারে ভাসে

পলাতক মেঘগুলো আজ আমার মাঝে বসত গড়ে
অঝর ধারায় কখনও দুচোখ বেয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরে
নীড়হারা পাখির মত মনটা শুধু পালিয়ে বেড়ায়
কখনও এ হৃদয় কখনও ও হৃদয়ে আতিথেয়তা খুজে যায় ||

তুমি জান কি ?

নীল আকাশে মেঘ ভাসে
শুভ্র মেঘ আকাশকেই ভালোবাসে
কতটা যন্ত্রনায় মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে
তুমি জান কি?
সারা দিন সূ্র্য পথ চেয়ে থাকে
আশায় চাঁদ এসে খুঁজবে তাকে
কতটা বেদনায় সূর্য ফিরে যায় বিকেলে
তুমি জান কি?
পরিশ্রান্ত সারাদিন, রাজ্যের ঘুম
এসে ঘিরে ধরে দুচোখের পাতায়
কতটা দুঃস্বপ্নে ঘুম ভাঙ্গে, রাত কাটে নির্ঘুম
তুমি জান কি?
দুঃখে পেলে সবাই কাঁদে
আনন্দেও ভাসে কেউ চোখের জলে
কতটা শোকে চোখ জল লুকায় হাসি মুখে
তুমি জান কি?

রোজনামচা

সারারাত সৃত্মির সাথে করি যুদ্ধ
সকালটা কাটে ঘুমন্ত
ভোরের সূর্যের মেলেনা দেখা......
একটু একটু রোদ দেয় যখন উঁকি
আমি আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠি
শুরু হয় আমার পথ চলা......
অলস মনটা কখনও
করে অফিস যেতে বারন
তবু ছুটি জীবিকার চাহিদায়.....
অফিস করি নামে
মন বসেনা কাজে
মন জানিনা থাকে কোথায়....
বিকেলটা এলে
মন উচাটন হয়ে উঠে
ছুটি চিরচেনা সে আড্ডায়.....
আড্ডা উঠলে জমে
মাঝরাতটা দেয় এসে হানা
মন রেখে আড্ডায় ফিরি বাসায়....
রুটিনের শেষ পিরিয়ডে প্রতিদিনই
সেই বিছানায় গড়াগড়ি
অপেক্ষা ঘুম নামার.....
প্রতিদিনই ভাবি,
বদলাব জীবনটা
যন্ত্র আমিতো নই......
পরদিন এলে আবার
সেই চিরচেনা রুটিন
আবার সেই একই পথচলা...........

অচেনা পথ, আমি একা পথিক

চেনা পথ চেনা ঘর চেনা ঠিকানা
জানিনা কেন আজ সবই অচেনা
জানা সুর জানা গান জানা রচনা
লাগে যেন আজ কিছুই জানিনা

এখন তো আমার ভয় নেই আর
কিছু হারিয়ে ফেলার
তাইতো পারি ভিড়িয়েছি অজানায়
নিঃস্ব করে সব হাহাকার ||

কত ছবি এঁকে সাজিয়ে রাখতাম মনের ক্যানভাসে
রং তুলিতে ধরে রাখতাম সবার আড়ালে
কত কবিতা কত গান লিখে জমাতাম বুকে
হারিয়ে ফেলি সেই ভয়ে লিখিনি ডায়রীতে |

কত বিকেল কত রাত কত উদ্দীপ্ত সকাল
হেটেছি বুকে নিয়ে চাপা দুঃখ ভয়াল
কত চাওয়া কত স্বপ্ন কত জলন্ত আশা
ছুড়ে ফেলেছি দূরে নিয়ে হতাশা |

আমি হারাব না , হারাতে আসিনি

সূর্যের মত দিনের শেষে হারিয়ে যাব না
রাতের মত ভোর হলে দিনে মুখ লুকাব না |
আমি হারাব না , হারাতে আসিনি
থাকব তোমাদের বুকে, মুছে দিতে পার কি ?

বৃষ্টি শেষে জলের মত মাটিতে শুষে যাব না
শীতের ভয়ে হাড় কাপিয়ে লেপ কাথায় জড়াবো না |
একদিন মরব বীরের মত, প্রতিদিনই মরব না
ইতিহাস করবো সৃষ্টি, ইতিহাসে হারাবো না ||

আমি হারাব না , হারাতে আসিনি
থাকব তোমাদের বুকে, মুছে দিতে পার কি ?

তবুও স্বপ্ন দেখে মন

পাঠিয়ে দিলাম ঠিকানা সীমাহীন আকাশের বুকে
জানিয়ে দিলাম ভালোবাসা ছোট্র এই কবিতাতে
হারিয়ে যাব একদিন সৃত্মির অগোচরে
খুজবে না জানি কেউ কখনও ভালোবাসার কোন প্রান্তে

তবুও স্বপ্ন দেখে মন, তাইতো এত আয়োজন
মিলনমেলার কোন পথে খুজে পাবো কোন প্রিয়জন ||

স্বপ্ন ছোঁয়া সৃত্মিরা ঝড় তুলে এ বুকে
হারায় মন আনমনা এক ভালোবাসার ডাকে
অনুভুতি বদ্ধ দুয়ার কখনও খুলে খুলে আসে
জীবিত না মৃত এ দন্দে হৃদয় শুধু হাসে

তবুও স্বপ্ন দেখে মন, তাইতো আশা বেচে থাকে
সুখ ছোয়া কোন মূহুর্তে খুজে পাবো নিজেকে ||

আহবান - - নুতন দিনের শুভ সূচনায়

ভোরের আকশের কুয়াশার মেলা কখনও কি দেখেছ তুমি ?
ছুঁয়ে দেখেছ কি আকাশে বিছানো নীল গালিচা কখনও তুমি ?
জানালা বন্ধ কেন তোমার ?
খুলে দাও কপাট
হাত বাড়িয়ে ডাকছে বিশ্ব
ছুটে এসো, সাথী হতে এসো , হাতে রাখ হাত
এগিয়ে যাও তুমি
ভেঙ্গে ফেলো রুদ্ধ দুয়ার
তাকিয়ে দেখো চারপাশে
কতজন অপেক্ষায় আছে তোমার |

এই সকাল কতকাল অপেক্ষায় ছিল তোমার
তোমার পরশ পেয়ে আজ দেখো মুছে ফেলেছে সব হাহাকার
ঐ আকাশ ডাকছে তোমায় এসো তুমি এসো
এ আমার মন এ আমার দেহ ছুয়ে দেখো, পরশ গায়ে মাখো
কাঁদছ কেন দুচোখ ভাসিয়ে, এত কান্না জমানো ছিল কোথায়
কান্নাতো তোমার জন্য নয় , হাসি যেন মুখে শোভা পায় |
তোমার ভাষা তোমার আবেগ তোমার ছোঁয়া
হোক তোমার ফিরে আসার নিশানা
তোমার পরশ তোমার আশা তোমার ভালবাসা
হোক কারও চলার পথের ঠিকানা |

কিছু প্রশ্ন... কিন্তু কার কাছে ?

ভাসতে কি দেখেছ ?
বৃষ্টিকে কখনও চোখের জলে
করতে দেখেছ কি হাহাকার ?
সমূদ্রকে নদীর জন্যে
যার আছে সে কি বুঝে ব্যাথা?
সেই বুঝে যে কখনও হারায়
আমি কাঁদি যার তরে
আমার সৃত্মি কি তাকে কাদায় ?

অভিলাষী উপমা, খুঁজে ফেরে কবিতা
উপমার কি দায় কবিতা খুঁজার ?
গল্প খুঁজে ফেরে চরিত্রের ভূমিকা
চরিত্রের গল্পের কি দরকার ?
বুঝতে কি ব্যাথা হৃদয় ভাঙ্গার
থাকত যদি হৃদয় তোমার
প্রয়োজন মিটে গেছে
তাই কি আজ পাশে নেই আমার ?

পাওয়া না পাওয়ার স্বান্তনা

কত যুদ্ধ ঝন্ঞাবিক্ষুব্ধ আহা এই জীবন
শত রঙ্গীন রাগে রাঙ্গানো আহ এ যৌবন
দক্ষিনা বাতাস, ছোট্র একটি ঘর, খোলা একটি জানালা
এতটুকু চাহিদায় কত আঁকাবাকা পথ চলা |

গভীর ছোঁয়ায় সুনীল পরশ, চন্চ্ঞল অনুভুতি বাঁধে বাসা
ক্ষণিকের ভাগ্যলিখন ক্ষণিকের জন্য পাওয়া জরাজীর্ণ ভালোবাসা
সৃত্মির বৃক্ষে ডালে ডালে বেড়ে উঠা নতুন সৃত্মির পাতা
কষ্ট চেপে বুকের গভীরে, ধীরে ধীরে বেঁচে থাকা |

প্রতিদিনই রুটিন করে সূর্য উঠে, ঝলমল আলোর ঝর্ণাধারা
অস্ত যাবার সময় ঘনায় কালো আধারের অবতারণা
উজ্জল হাসিতে চাঁদ হাসে, হাসে অপরূপ জোসনা
ভোর হবে সূর্য উঠবে, এই ভেবে মন খুঁজে স্বান্তনা..||

বলে দাও প্রিয়া সে প্রিয় কথা

বলে দাও বলে দাও প্রিয়া সেই প্রিয় কথা
যারে শুনিবার লাগি, কেটে যায় নিশি রজনী
প্রভাত দুপুর সন্ধ্যা
বলে দাও সেই প্রিয় কথা......

সারারাত ভাবনা দোল খায় মনে
অজানা ভয় শিহরিত অনুভবে
সারাক্ষন একই প্রশ্ন জাগে মনে
ভাসবে কি মোর হৃদয়ের স্রোতে ?

থমকে যায় কভু চাওয়া পাওয়া
যখন দেখি তোমায় নীরবতা
বুঝি আমার ভালবাসা এভাবে
থমকে যাবে নীরবে ?

মুখের ভাষায় নাই তুমি বললে
বলে দাও তুমি দুনয়নে
ভাগ্য লিখন জানি বিধাতার হাতে
তবু এইটুকু প্রসাদ দাও মোর ঝুলিতে
বলে দাও প্রিয়া সেই প্রিয় কথা আমাকে |

কখনও ভাবি আমিই বলব
হোক যা হওয়ার আছে ভাগ্যে
নিশ্চুপ রই অবশেষে
জড়িয়ে অজানা এক ভীতিতে
বলে দাও প্রিয়া সেই প্রিয় কথা আমাকে |

অপ্রকাশিত আমি ও আমার কবিতা

মনের গভীরে আজও তোমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই
স্বপ্নের ঘোরে কখনও তোমার মাঝে হারিয়ে যাই
আশা ভালবাসার এক দেয়াল তুমি
তুমি আমার প্রেমের বিচরণ ভূমি
তুমি চাওয়া , পরিশেষে আরাধ্য এক ভূবন
কিছু সুখ কিছু দুঃখ এই নিয়ে গড়া আমার জীবন....|

নীরব আঁধারে কখনও তোমাকে খুঁজে বেড়াই
হৃদয়ের ক্যানভাসে তোমার ছবি আজও একে যাই
প্রেম ভালোবাসার এক গাঁথা তুমি
তুমি আমার উপন্যাসে মূল চরিত্রের পটভূমি
তুমি সুর তুমি ছন্দ, ডায়রীতে লিখে রাখা প্রিয় কথা
তুমি অপ্রকাশিত আমি ও আমার কবিতা...||

যদি ফেরা যায় যাব অতীতে

অভিলাসী শত বাসনা জাগে মনের লোকালয়ে
মোহিনী জোসনা রাতে চাঁদ তারা আনমনে ডাকে
আবেগী অগোছালো কবিতায় ছুঁয়েছে হেয়ালী উপমা
ছলনায় আবেগগুলো আটকে হয় আনমনা

মুখরিত এই স্বপ্নের মেলায় পলাতক স্বপ্নগুলো আমার
ভলোবাসার বিশাল ইন্দ্রজালে বন্দী হৃদয় আমার
আমি চাই ফিরে যেতে আমার সুদূরঅতীতে
যেখানে মত্ত ছিলেম, নিজেই নিজেকে নিয়ে ............

কে আমি ?- নিজের কাছেই আমি অচেনা

মায়াবী দুচোখে তাকিয়ে তাকিয়ে কাটত যার সারা ক্ষন
এখন সে আর নেই আগের সেই সে, এখন সে অন্য একজন
পিছু পিছু ঘুরে কাটত সময়, কাটত রাত দিন
সময়ই খুঁজে পায়না তাকে আর এখন
এখন সে অন্য একজন ||

হৃদয় ঘিরে ছিল লুকানো না পাওয়ার যন্ত্রনা
এখন সে হৃদয়ে যন্ত্রনাই মূল প্রেরনা
বিলীন হয়ে গিয়েছিল সুখের সোনালী জীবন
এখন সুখ দিয়ে নির্মিত তার ভূবন
এখন সে অন্য একজন ||

নির্ঘুম রাত বিষণ্ণ প্রভাত কাটত যার অনন্তকাল
এখন আসেনা প্রভাত আসেনা রাত সবই নিজের খেয়াল
বেদনার কবিতা বেদনার গান ছিল যার বড় আপন
সবকিছু হারিয়ে যাওয়া সৃত্মির পাতা এখন
এখন সে অন্য একজন ||

আমার গীটার ও কবিতা - দুজনাই কাঁদতে জানে

বিদায় বেলায় দুঃখে কেঁদেছ
আমি হেসেছি দুঃখে
নিয়তির কাজে বাধা পড়ে গেল তাই
বলী হলাম অবশেষে
দুঃখ পেলে কতজনা কতকিছু করে
আমি ঝড় তুলি গীটারে
আমার গীটার দুঃখ পায় ঠিকই
ভয় পায় প্রকাশে
আমি বাঁধি সুর বিরহের
সে শুধু মৃদু হাসে |

প্রিয়তমা তুমি প্রিয় আছ আজও
প্রিয় থেকে আমায় মুছেছ
হৃদয়ের বসতি দখলে রেখে
হৃদয় থেকে আমায় সরিয়েছ
আমার ঠিকানা খুজে পাইনি আজও
তোমার ঠিকানা গড়ে দিয়েছি কবিতাতে
আমার কবিতা দুঃখ দিতে জানে ঠিকই
ভয় তুমি যদি দাও কেঁদে
আমি লিখি কবিতা বিরহের
সে সুখ লুকায় ছন্দে ......||

ফিরে দেখো আমরা আছি

ভূলোনা বন্ধু আমায় আবার হবে দেখা
এই দেখাই শেষ দেখা নয়
দেখা হবে বন্ধু নুতন কোন পথে
আবার হবে প্রেম বিনিময় |

খুঁজে ফেরবো বন্ধু তোমায় নির্জণ কোন প্রহরে
হয়তো আবার হবে পরিনয়
কথা হবেরে বন্ধু গোপনে তোমার সাথে
নুতন করে আবার করবো পরিচয় |

দেখা হবে হারিয়ে যাওয়া সোনালী মহালগনে
অবারিত সুখের ঝর্ণাধারায়, অজস্র বর্ষা শ্রাবনে
খুঁজবো তোমায় চাঁদনী রাতে সোনাঝরা জোস্নার প্লাবনে
কথা হবে আলোকিত মুহূর্তের অমলিন সঙ্গোপনে |

বেশ আছি আমি তুমি ভালো আছো তো

যদিও কিছু অপূর্ণতা জড়িয়ে আছে আমায়
তবু দেখ অপূর্ণ নই আমি থেমে নই স্থিরতায়
যে স্বপ্ন ভেঙ্গেছ ভাবছ কি হারিয়েছে আধারের পাতায়
স্বপ্ন ভেঙ্গেছে আমিতো ভাঙ্গিনি তাই স্বপ্নরাই স্বপ্ন দেখায়
তুমিহীনা ভাবছ কি আমায় কতটা নিঃসঙ্গ
দেখ একাকীত্ব আমার প্রেম করেনি ছত্রভঙ্গ
ভালবাসাহীন ভাবছ কি আমায় কতটা অসহায়
দেখ কি সুখ আশেপাশে আমার হারায় অবহেলায় |

আকাশের মত বিশাল হৃদয় আজ পূর্ণ কালো মেঘে
সাগরের মত গভীর দুচোখ আমার পূর্ণ অশ্রুজলে
একাকী রাত সঙ্গী আমার সঙ্গী ঐ চাঁদ
সখা সখীর ভীড় চারপাশে তোমার নেই অভাব ||

নুতন এক দিনের প্রত্যাশায়

ছুঁড়ে ফেলে ফুল, করেছ কি ভূল বুঝতে বন্ধু পারনি
খুঁজতে গিয়ে সুখ হারালে যে পথ খুঁজে তুমি পাওনি
অভিমান ছুঁয়ে জমালে হৃদয়ে সুণিপুন কত সংশয়
খুলে ফেলরে বন্ধু মনের জানালা, হাত বাড়িয়ে ডাকছে সময়
তাই হৃদয়ের পথে চলরে বন্ধু, ভালোবাসার পথে চল
দেখরে আকাশে দুচোখ মেলে সোনালী আলো করে ঝলমল |

জানি আমার এ প্রয়াস
বেদনা ভরা মনে তোমার জাগাবে না কোন উচ্ছাস
তবু এত আয়োজন যাবেনা বিফল জেনো
এইটুকু কর বিশ্বাস |
হারিয়ে যাও তুমি সৃত্মির আচঁলে
কর নুতন দিনের শুভসূচনা
ভালোবাস বন্ধু স্বপ্নগুলো
হোক তারাই তোমার শেষ ঠিকানা ||

প্রেমালাপ –– পাগলের প্রলাপ

আকাশের বিশাল ক্যানভাসে
দেখবে কখনও আমার মুখ
চোখ বুঝলেই পাবে খুঁজে
তাকিয়ে আছে আমার দুচোখ |
ঘুমের রাজ্যে সওদাগর বেশে
আসব কখনও স্বপ্ন কিনতে
মনের বদলে মন দেয়ার ছলে
রাজ্য রাজকন্যা নেব দখলে |

আমি ছুয়ে যাব তোমার অণুরনে
অনুভূতির প্রতিটি শিহরণে
সর্ম্পকের অনু থেকে পরমানু
ছড়িয়ে দেবো ভালোবাসি, তুমি জেনো...
মেঘ করে পাঠাবো ভালোবাসা
বৃষ্টি হয়ে ঝরবে তোমার আঙিনায়
দিগন্তের অসীম সীমারেখায়
লিখে দেবো ভালোবাসি তোমায়‍ ‍||

জীবনশাস্ত্রের কয়েক উপাখ্যান

অন্তর্যামী গড়ল দেহ মাতার গর্ভধারন
পিতার পরিচয়ে নরের ধরায় আগমন
সোনা মানিক সাত রাজার ধণ আদরে রইল মত্ত
দেখতে দেখতে কাটল শৈশব কৈশোর হল গত |

সাদা বসন কালো মন রঙ্গীলা ভূবন
রঙ্গীন নেশায় দুনিদারী ধূলারই মতন
জীবন নদীর দুর্গম পথে যৌবনে ভ্রমন
নাও বেয়ে নর করল নারীতে গমন |

মিলল যে নর মিলল যে নারী অচীন দুজন
সংসার হল বংশ হল নুতন এক ভৃবন
সংসার ধর্ম বড়ই জটিল ভালোবাসার শক্ত এক বন্ধন
সৃষ্টির আদি সৃষ্টির অন্তে যার অবাধ বিচরণ |

জীবনশাস্ত্র অবশেষে ফুরাল একদিন
বসন সাদা কাফন, সাথী রঙ্গীলা কফিন
পাপ পূণ্যের হিসেব মেলাতে নর ব্যস্ত যখন
দুঃখ ভূলে স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে সবাই করবে চারণ ||

রাতের জন্য ভালোবাসা

রাতের বিশাল হৃদয়ে লুকিয়ে আছে মহাকালের শত ব্যার্থতা
আমিও তাকে দিয়েছি উপহার সীমাহীন আমার নিঃসঙ্গতা
তন্দ্রাবিহীন দুচোখ খুঁজে প্রশান্তির কোমল বিলাসিতা
অনিশ্চিত এই জীবনে আমার সেই মেটায় সব চাহিদা |

বেদনার নীল পরীরা আমার সংকীর্ণ আকাশে উড়ে
তাই তো আমি পালিয়ে বেড়াই রাতের নির্জণ আঁধারে
আঁকি ছবি গড়ি স্বপ্ন রাতের বিশাল ক্যানভাসে
লিখি কবিতা লিখি গান রাতের আধারকে ভালোবেসে |

নীরব যুদ্ধ চালাই বুকে সৃত্মিদের করি বন্দী
পক্ষ আমি প্রতিপক্ষও আমি, নিজেই নিজের প্রতিদন্ধী
তোমার কাছে একটাই আবদার রাখি অন্তর্যামী
রাতের আধার যেন থাকে ডাকবে যেদিন আমায় তুমি |

আমি সৈনিক আমি যোদ্ধা

শহীদ মিনার আর সৃত্মিসৌধের পাশে
রাজাকারেরা বক্তৃতা দেয় মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে
আর স্বাধীন বাংলার ধুলো মাখা পথে
মুক্তিযুদ্ধারা কুকঁড়ে মরে দুমুঠো অন্নের সন্ধানে |

দেশ সেবক আর জনদরদীর বেশে
মীরজাফরেরা ঘুরে মর্যাদার চাহিদায়
আর পরিচিত কিছু মুখ তাদের ঘিরে
মেতে উঠে ক্ষমতার পিপাসায় |

তখন হাজারো প্রশ্ন উঁকি দেয় মনে
লাখো শহীদ প্রাণ দিয়েছিল কি এমন দেশেরই জন্য ে?
এর জন্যই কি কোটি জনতা জেগে উঠেছিল বিদ্রোহীর বেশে?
লাখো মা বোন সম্ভ্রম হারালো কি এমনই দিনের আশে?

এও কি হতে পারে ?
এভাবে কি সইতে পারি সব মুখ বুঝে?
তাই আবার যুদ্ধে যেতে হবে
হয়তো আবার শহীদ হতে হবে|

আমার কলমে প্রচন্ড শক্তি আছে
যে শক্তি বিধাভা দিয়েছে লড়তে সব অপশক্তির বিরূদ্ধে
আমার বুকে প্রচুর সাহস আছে
যে সাহস বিধাভা দিয়েছে রুখতে সব বাধা বিপত্তিকে|

নবীযুগের জিহাদে আমি লড়তে পারিনি
পারিনি লড়তে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে
একবিংশের এ যুদ্ধে আমি লড়ব
যদি কেউ না আসে তবে একাই মুক্তির এ পথে|

আমি সৈনিক আমি অশান্ত
আমি যোদ্ধা আমি দুরন্ত ||

জীবন তরী

ঘুমিয়ে পড়েছে ব্যাস্ত জনপদ ঘুমিয়ে পড়েছে এ শহর
চাঁদের সাথে সঙ্গী আমি জেগে আর জেগে নিঃসঙ্গ এ প্রহর
চারদিকে নীরব আধারের বসবাস স্বর্ণালী কত স্বপ্ন পড়ে কাফন
অজানা শত ব্যাথা বুকের গভীরে চেপে ভালোবাসা পাঠাই নির্বাসন |

জেগে জেগেই দেখি মিটছে আধার আবার ব্যাস্ত এ শহর
হতাশার করাঘাতে হৃদয় গভীরে শুধু রক্ত ঝরে অঝর
বিশুদ্ব পবন দূষিত হল রেখে গেল শুধু কিছু আলোড়ন
এক বুক স্বপ্ন বুকের গভীরে নিয়ে ছুটি মিটাতে জীবনের প্রয়োজন |

আমি ছিপ খোলা এক নৌকার মাঝী
ভেড়াব জানিনা কোথায় আমার তরী
পথ হারিয়ে তোমাদের এই শহরে
ক্লান্ত মাঝী আমি কূল খুঁজে মরি ||

বাংলাদেশ

উর্বর পথ প্রান্তর পারি দিয়ে বয়ে চলে পাহাড়ী নদী
দু পার ঘিরে কুর্ণিশ জানায় অপরূপা শ্যামল প্রকৃতি
হাসি গান সুখ দুঃখ মিলেমিশে ঘরবসতি
নকশী কাথার বুননে বুননে গড়ে শত জীবনের ছবি |

শত লুলোপ জাতি তোমাকে পেতে করেছে হানাহানি
লক্ষ প্রাণ আজও অম্লান জীবন দিয়েছে তবু তোমায় ছাড়েনি
কত বাউলের একতারায় বাজে তোমার বিজয় ধ্বনি
কত কবিতা কত গান কোটি প্রাণে করে প্রতিধ্বনি |

বাংলাদেশ
শত সহস্র দেশের মাঝ থেকে
কেউ পারবে কি আর একটা তোমায় খুঁজে দিতে?
বাংলাদেশ
শত শত জন্মের পরেও
আশ ফুরোবেনা তোমার কোলে জন্ম নিতে|

অংশের ফিরে আসা

ঢাকলাম নিজেকে লোকচক্ষুর অন্তরালে
কেটে গেল অনেকগুলো দিন নীরবে নিভৃতে
গাঢ় অনুভূতি অফুরন্ত আবেগ অতৃপ্ত ভালোবাসার টান
বিচ্ছিন্ন ছিল এতদিন রেখে হৃদয়ে অগোছালো অভিমান |

হঠাৎ থমকে দাড়ালাম বেহিসেবী সবকিছু
এলোমেলো পেলাম আমার জীবন
প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসেব মেলেনা
জয়ী হয়েও পরাজিত আমি একজন ||

থাক অভিযোগ কি লাভ অযথা পিছুটেনে
জানি কেটে যাবে সব অমানিশা
তাইতো সব অভিযোগ পিছনে ফেলে
অংশের এ ফিরে আসা |||

হ-য-ব-র-ল বিটিভি

আজব এক খবর শুনি বিটিভির সংবাদে
হাসিনা আপা নাকি ‍আড্ডা দিচ্ছে খালেদা ভাবীর সাথে...!!
মুজাহিদ আর এরশাদ কাকু শহীদ মিনার চত্ত্বরে
নিজের কুশপুত্বলিকা নিজেই নাকি পুড়ে...!!!

চোখ আমার চড়কগাছ কপালেতে উঠে
এই খবরটা অন্য চ্যানেল খুঁজে খুঁজে মরে
AL.. BNP.. NP.. JAMAT … সবাই ঠিকই আছে
যে খবরটা খুজি তার দেখা নাইরে...
তার দেখা নাই

ল্যাপটপ..!!!

হার্ড ডিস্কের মত হৃদয় টাকেও যদি ফরম্যাট করা যেত
তোমাকে আবার রিইনস্টল করে নিতাম
প্যাকেজের মত যদি কাষ্টমাইজ অপশন থাকত
ভালোবাসার ‍প্রোগ্রামগুলোই শুধু ইনস্টল করতাম |
ইস যদি আমি একটা ল্যাপটপ হতাম
নিজেকে তোমার মনের মত সফ্টওয়্যার এ সাজিয়ে নিতাম
রেগুলার অ্যান্টি ভইরাস আপেডট করে
ভূলগুলোকে সব ডিসইনফেক্ট করে দিতাম ||

ক্ষনিকের অতিথি

ক্ষনিকের অতিথি আমরা সবাই
ক্ষনিকের এ মিলনমেলা
মুছে যাবে ধীরে ধীরে সব সৃত্মিচিহ্ণ
শেষ হবে যেদিন পথ চলা ।
পরবে কি মনে ? হাজার সৃত্মির পটে
আমাদের এত আয়োজন
খুজবে কি কেউ ? নতুনের ভীড়ে
কোন প্রিয়মুখ কোন প্রিয়জন ।

এ মৃত্যূর বেদনা কোথায় ?

সম্মুখে সীমাহীন আধার পথ আছে শুধু হারাবার
আলোকিত করে নিজেকে সুযোগ নেই প্রকাশ করার
জন্মেছি বোবা হয়ে মরব ও বোবা হয়ে
তবু সংশয় মনে কাফন জোটে কিনা কপালে
চারদিকে শকুনের দল করছে কোলাহল
আমার ভাইদের রক্তে রন্জ্ঞিত রাজপথ
না আর নয় , মাগো আর রেখোনা মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে আমায়
হাসিমুখে দাও বিদায়, মনের অস্ত্র ফিরিয়ে দাও
সময় হয়েছে যুদ্ধে যাওয়ার
শৃংখল ভেঙ্গে মুক্ত হওয়ার
কেঁদোনা মা অশ্রু ফেলো মুছে
দেখা আর নাই হলো তোমার সাথে
এ মৃত্যুর বেদনা কি আছে ?
দেখা হবে অমর বেশে স্বাধীন আমার বাংলাদেশে